এজোলা কিঃ বাংলাদেশে এজোলাকে মানুষ ভিন্ন ভিন্ন
নামে চেনে, যেমন- ক্ষুদিপানা, তেঁতুলিয়াপানা,
বুটিপানা, কুটিপানা ইত্যাদি নামে
পরিচিত। এজোলা যদিও ক্ষুদিপানা, তেঁতুলিয়াপানা, বুটিপানা, কুটিপানার গোত্রের মতই কিন্তু ভিন্ন,
ক্ষুদিপানা, তেঁতুলিয়াপানা, বুটিপানা, কুটিপানা থেকে এজোলার পুষ্টিমান বেশী,
এজোলা ফার্নজাতীয় ক্ষুদ্র জলজ উদ্ভিদ। তাই ধান ক্ষেতেও হয়,
এর ভাসমান গুচ্ছগুলো ত্রিকোণাকার। প্রতিটি ভাসমান গুচ্ছের প্রধান
কা-র উভয় দিক থেকে ৮-৯টি শাখা বের হয়। প্রতিটি শাখায় ১০-১২টি পাতা উভয় দিকে একটির
পর একটি সাজানো থাকে। যৌন (বীজ) ও অযৌন (অঙ্গজ) উভয় পদ্ধতিতে এজোলা বংশ বৃদ্ধি করে।
পানিতে ভাসমান অবস্থায় এজোলার বংশ বৃদ্ধি ভালো হয়। কাদামাটিতে এজোলা বেঁচে থাকতে
পারে। সাধারণত ২৫-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় তাই এর অঙ্গজ বংশ বিস্তার দ্রুত
হয়। তাপমাত্রা বেশি হলে যেমন চৈত্র-বৈশাখ মাসে প্রচন্ড গরম ও প্রখর রোদে এজোলা বংশ
বৃদ্ধি করে না, তবে বেঁচে থাকে।
প্রাণীর খাদ্য হিসেবেঃ এজোলা
মাছ,
হাঁস-মুরগির খাদ্য তৈরিতে ব্যবহার হয়। এজোলা মাছের ও হাঁস-মুরগির উৎকৃষ্ট আমিষজাতীয় খাদ্য।
এজোলায় প্রচুর আমিষ ও চর্বি থাকায় উচ্চমানের খাদ্য তৈরি
হয়। রাসায়নিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, এজোলায় আমিষ ২৪-৩০% প্রায়,
অ্যাশ ১০%, শ্বেতসার ৬-৬.৫%, চর্বি ৩-৩.৫%, দ্রবীভূত সুগার ৩-৩.৫% ও
ক্লোরোফিল এ ০.২৫- ০.৫%, আরও আছে অত্যাবশ্যকীয় এমাইনো
এসিড, গ্রোথপ্রেমোটর (ভিটামিন এ, ভিটামিন বি১২, বেটা-কেরোটিন) ।
কাঁচা এজোলায় শতকরা ৬ ভাগ শুকনো বস্তু থাকে। এতে শতকরা
৩-৪ ভাগ নাইট্রোজেন, পটাশিয়াম ০.২৫-৫.৫ ভাগ, ক্যালসিয়াম ০.৪৫.১.২৫ ভাগ, সিলিকা ০.১৫-১.২৫
ভাগ, সোডিয়াম ০.১৫-১ ভাগ ফসফরাস ০.১৫.১ ভাগ, কোরিন ০.৫-০.৭৫, সালফার ০.২ -০.৭৫ ভাগ,
ম্যাগনেসিয়াম ০.২৫-০.৫ ভাগ এলুমিনিয়াম ০.০৪-০.৫ ভাগ, আয়রন ০.০৫-০.৫ ভাগ, ম্যাঙ্গানিজ ৬০-২৫০০
পিপিএম,কপার ২-২৫০ পিপিএম ও জিংক ২৫-৭৫০ পিপিএম।
মাছ চাষে পুকুরে পানি বিশুদ্ধ রাখে ও মাছের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, মাছের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। এজোলা
দিয়ে পশু-পাখি খাদ্য ও মাছের উৎপাদনে খরচ কম হয়।
সংরক্ষণঃ সারা বছর এজোলার বীজতলা সংরক্ষণ করা যেতে পারে। পুকুর, ডোবা বা বদ্ধ জলাশয়ে সংরক্ষণ করা যায়। অতি বৃষ্টি ও রোদ থেকে রক্ষার জন্য শাকসবজির মাচা করা যেতে পারে। বীজতলায় সর্বদা ৫-১০ সেমি পানি থাকতে হবে। প্রতি বর্গমিটার বীজতলার জন্য ১ গ্রাম টিএসপি ৮-১০ দিন পর পর দিতে হবে। শামুক ও পোকার কীড়া এজোলার ক্ষতি করে। শামুক বেছে ফেলতে হবে। পোকা দমনের জন্য কার্বোফুরান স্প্রে করা যেতে পারে।
এই বিজ কোথায় পাবো ভাই
ReplyDelete