Saturday, November 17, 2018

কম খরচে গরুকে সাইলেজ করে খাওয়ানোর উপায়



 ফার্মকে লাভবান করার জন্য অনেকগুলো বিষয়ের মধ্যে যে দুটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ তা হল:
১.  খাবার খরচ কমিয়ে আনা
২.  ব্যবস্থাপনা খরচ কমিয়ে আনা

সাইলেজ ও এর ব্যাবস্তাপনাঃ

টনকে টন ঘাস, খড়, ভুট্টার গাছকে ক্ষেত থেকে কেটে এনে ছবির মত ছোট ছোট পিছ করে একটা নির্দিস্ট স্থানে যেখানে জমিয়ে রেখে কয়েক মাস ধরে খাওয়ানোর পদ্ধতির নামই সাইলেজ প্রক্রিয়া।
প্রথমে ক্ষেত থেকে কেটে আনুন ঘাস, খড় ও ৬৫-৭০ দিনের আস্ত ভুট্টা গাছ। ভুট্টাটা এমন হতে হবে যেন দানাগুলো নরম থাকে। এরপর মেশিনের সাহায্যে ঘাস, খড়, ভুট্টা গাছকে ছোট ছোট পিস পিস করে একত্রে মিশিয়ে নিম্নোক্ত কয়েকভাবে স্টোর করে রাখা যাবে।


১) ড্রামের ভিতর ভালভাবে চেপে ঢুকিয়ে মুখ বন্ধ করে এয়ার টাইট করে রাখা।যেন বাতাস না ঢোকে।
২) মাটির নিচে গর্ত করে মোটা পলিথিন বিছিয়ে ভালভাবে চেপে এয়ার টাইট করে মুখ বন্ধ করে রাখা।
৩) কোন এয়ার টাইট রুমের ভেতরে ভালভাবে চেপে চেপে রেখে পলিথিন দিয়ে ঢেকে এয়ার টাইট করে বেধে রাখা।
যখন খাওয়ানোর দরকার হবে এখান থেকে বের করে খাওয়াতে হবে। তবে আমাদের দেশে আবহাওয়ার বেশী আদ্রতার কারনে দেখা যায় খোলা জায়গায় পলিথিন দিয়ে ঢেকে যদি সাইলেজ করে রাখা হয় বাতাস ঢুকে যাবার কারনে ১০%-১৫% এর মত খাবার অনুপযোগী হয়।
এই সাইলেজে খুব সুন্দর একটা ঘ্রান আসবে এবং খেতে দেবার আগে তা বের করে খোলা জায়গাতে মেঝেতে বিছাতে হবে। এরপর পরিমানমত চিটাগুড় এবং খুব সামান্য ভুষি, কুড়া মিশিয়ে সবগুলো মিশ্রন করে শুকনো অবস্থায়ই গরুকে খেতে দেয়া হয় দিনে ৩ বার। এতে পানি মিশাবেন না। খাবার পর পাত্রে ফ্রেস পানি দিয়ে দিতে হবে। আমাদের অনেক গরু আছে ফ্রেস পানি খেতে চায়না, কিন্তু এটা অভ্যাসের ব্যাপার। যা অভ্যাস করাবেন তাই হবে।


  • উত্তম উপায়ে সাইলেজ তৈরি করতে ফুল আসার পূর্বেই ঘাস কেটে ফেলতে হবে ৷
  • সাইলেজ তৈরির করার জন্য প্রথমে একটি গর্ত করতে হবে
  • এরপর গর্তের মধ্যে (নিচে ও চারিপাশে) পলিথিন অথবা খড় ভালোভাবে বিছিয়ে দিতে হবে
  • প্রতি ৩০০ কেজি সবুজ ঘাসের জন্য আলাদা একটি পাত্রে ঌ-১২ কেজি চিটাগুড়ের সাথে ৮-১০ কেজি পানি মিশিয়ে একটি দ্রবণ তৈরি করে নিতে হবে ৷
  • এরপর গর্তের ভিতরে স্তরে স্তরে সবুজ ঘাস বিছাতে হবে৷ সবুজ ঘাসের স্তরের উপর পানি মিশ্রিত চিটাগুড় সমভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে এবং তার উপর শুকনা খড় বিছাতে হবে ৷
  • এর ভিতরে কোন ধরনের বাতাস যাতে না থাকে সেজন্য খড়ের গাদাটি ভালভাবে পা দিয়ে পাড়িয়ে দিতে হবে ৷
  • তারপর মাটি থেকে ৪-৫ ফুট পর্যন্ত সবুজ ঘাস সাজিয়ে দিতে হবে যাতে ঘাস শ্তষ্কহয়ে নীচু হলেও মাটির সমান্তরালের চেয়ে উচু থাকে ৷কারন এতে গর্তে পানি প্রবেশ করতে পারবে না
  • ঘাসের উপর এবং চারিপাশে শুকনো খড়ের পুরু আস্তরণ তৈরি করতে হবে এবং সম্পূর্ণ আস্তরণটি পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে ৷
  • পলিথিন যাতে বাতাসে উড়ে না যায় সেজন্য মাটি চাপা দিয়ে দিতে হবে ৷
সাবধানতা :
  • নীচু জায়গায় সাইলেজ তৈরির গর্ত করা যাবে না, কারণ তাতে পানি জমে সাইলেজ নষ্ট হয়ে যায় ৷উপরের পলিথিন ভাল করে সেটে দিতে হবে যাতে কোন পানি সাইলেজের ভিতরে প্রবেশ না করে ৷
  • চিটাগুড় পাতলা হলে পরিমাণ বাড়িয়ে পানি কম করে মিশাতে হবে, কারণ বেশি পাতলা হলে চুয়েচুয়ে নীচে চলে যাবে ৷
  • মিশ্রন এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে আঠার মত ঘাসের গায়ে লেগে না থাকে ৷
  • ঘাস ও খড় এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে কোন ফাঁকা জায়গা না থাকে ৷
  • মহিষ-বাছুর যাতে পলিথিন নষ্ট না করে সেদিকে খেয়াল করতে হবে ৷










Friday, November 9, 2018

গোখাদ্য হিসাবে ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র


গোখাদ্য হিসাবে পরিচিত ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র তৈরির বিস্তারিত নিয়ম কানুন

গ্রামের কৃষকরা সাধারনত গবাদিপশু কে শুকনো খড় খাইয়ে থাকে। শুধু শুকনো খড় খাইয়ে গবাদিপশুর প্রয়োজনীয় পুস্টির চাহিদা পুরন করা যায় না। ফলে অধিকাংশ গবাদিপশু অপুস্টিতে ভোগে। তাই খড়ের পুষ্টিমান বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ পশুসম্পদ গবেষণা ইনষ্টিটিউই দীর্ঘ গবেষণা ও কৃষক পর্যায়ে যাচাই করে দেশে প্রাপ্ত খড়, ইউরিয়া ও চিটাগুড়ের মিশ্রণে তৈরী করেছে ইউ, এম, এস, গো-খাদ্য প্রযুক্তিটি। এটি ইউ রিয়া, মোলাসেস এবং খড় (স্ট্র) এর একটি মিশ্রিত খাবার যা গরুকে প্রতিদিন শুকনা খড়ের পরিবর্তে চাহিদামত খাওয়ানো যায়।

ইউ. এম. এস. তৈরীর পদ্ধতিঃ
ইউ,এম,এস তৈরীর প্রথম শর্ত হল এ উপাদনগুলির অনুপাত সর্বদা সঠিক রাখতে হবে অর্থাৎ ১০০ ভাগ ইউ,এম, এস এর শুষ্ক পর্দাথের মধ্যে ৮২ ভাগ খড়, ১৫ ভাগ মোলাসেস এবং ৩ ভাগ ইউরিয়া থাকতে হবে।সহজ ভাষায় যতটুকু খড় মিশ্রিত করব তার অর্ধেক পরিমাণ পানি, পানির অর্ধেক পরিমাণ মোলাসেস/নালী/চিটা এবং প্রতি কেজি খড়ের জন্য ৩০ গ্রাম ইউরিয়া নিতে হবে যেমন ১০ কেজি খড়ের জন্য ৫ লিটার পানি, ২.৫ কেজি মোলাসেস এবং ৩০০ গ্রাম (১০x৩০গ্রাম) ইউরিয়া লাগবে।
* প্রথমে খড়, মোলাসেস ইউরিয়া পরিমাণ মতো মেপে নিয়ে খড়গুলোকে কুচি কুচি করে কাটতে হবে।
* মোলাসেস ও ইউরিয়া ওজনের পর প্রয়োজন মত পরিস্কার পানিতে এমনভাবে মিশাতে হবে যাতে সম্পূর্ণ দ্রবণটুকু খড়ের সাথে সহজে মিশানো যায়।
* শুকনো খড়কে পলিখিন বিছানো বা পাকা মেঝেতে সমভাবে বিছিয়ে ইউরিয়া মোলাসেস দ্রবণটি আস্তে আস্তে ঝরনা বা হাত দিয়ে ছিটিয়ে দিতে হবে এবং সাথে সাথে খড়কে উল্টিয়ে দিতে হবে যাতে খড় দ্রবন চুষে নেয়। এভাবে স্তরে স্তরে খড় সাজাতে হবে এবং ইউরিয়া মোলাসেস দ্রবন সমভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।
* এরপর পলিথিনের বস্তায় ভরে খড়গুলো এমনভাবে চাপ দিয়ে মুখ বাঁধতে হবে, যেনো বস্তার ভেতর বাতাস না থাকে। প্রয়োজন অনুযায়ী ঐ খাদ্য বস্তা খুলে বের করে পশুকে খেতে দিতে হবে এবং বস্তার মুখ সঙ্গে সঙ্গে শক্ত করে বেঁধে রেখে দিতে হবে।


প্রথমে খড়, মোলাসেস ইউরিয়া পরিমান মেপে নিতে হবে।মোলাসেস ও ইউরিয়া ওজনের পর প্রয়োজন মত পরিস্কার পানিতে এমনভাবে মিশাতে হবে যাতে সম্পূর্ণ দ্রবণটুকু খড়ের সাথে সহজে মিশানো যায়।শুকনো খড়কে পলিখিন বিছানো বা পাকা মেঝেতে সমভাবে বিছিয়ে ইউরিয়া মোলাসেস দ্রবণটি আস্তে আস্তে ঝরনা বা হাত দিয়ে ছিটিয়ে দিতে হবে এবং সাথে সাথে খড়কে উল্টিয়ে দিতে হবে যাতে খড় দ্রবন চুষে নেয়। এভাবে স্তরে স্তরে খড় সাজাতে হবে এবং ইউরিয়া মোলাসেস দ্রবন সমভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।
শুকনো খড়      পানি               চিটা/নালী গুড়              ইউরিয়া
৫ কেজি     ২.৫ থেকে ৩.৫ লিটার   ১কেজি ২০০ গ্রাম      ১৫০ গ্রাম
১০ কেজি
   ৫থেকে ৭ লিটার         ২ কেজি ৪০০ গ্রাম     ৩০০ গ্রাম
২০ কেজি     ১০ থেকে ১৪ লিটার   ৪ কেজি ৪০০ গ্রাম     ৬০০ গ্রাম
৫০ কেজি
   ২৫ থেকে ৩৫ লিটার    ১২ কেজি                 ২ কেজি
১০০ কেজি
  ৫০ কেজি ৭০ লিটার     ২৪ কেজি                ৩ কেজি
ব্যবহার পদ্ধতিঃ
ইউরিয়া মোলাসেস খড় সঙ্গে সঙ্গে গরুকে খাওয়ানো যায় অথবা একবারে ২/৩ দিনে তৈরী খড় সংরক্ষণ করে আস্তে আস্তে খাওয়ানো যায়।তবে ২/৩ দিনের খড় একবারে তৈরী করলে ইউ এম এস পলিথিন দ্বারা ভালভাবে ঢেকে রাখতে হবে।

খাওয়ানোর পরিমানঃ
গরুকে তার ইচ্ছ অনুযায়ী, অর্থাৎ গরু পরিমান থেতে পারে পরিমাণ ইউ এমএস সরবাহ করতে হবে। তবে গরুকে আস্তে আস্তে অভ্যস্ত করিয়ে নেওয়া ভাল।
আয়-ব্যয়ঃ
খড়ের দাম বাদ দিলে ইউরিয়া, মোলাসেস ও শ্রমিক খরচ বাবদ কেজি প্রতি ইউ, এম, এস খরচ ০.৬৫ হতে ০.৭৫ টাকা। মোলাসেস ও শ্রমিকের উপর এই খরচ নির্ভর করবে। এ পদ্ধতিতে খড়ের সঙ্গে ১.০০ টাকার মোলাসেস খাইয়ে প্রায় ৫.০০ টাকা মূল্যের গরুর মাংস উৎপাদন সম্ভব।
সর্তকতাঃ
* অবশ্যই UMS তৈরী করার সময় ইউরিয়া, মোলাসেস, খড় ও পানির অনুপাত ঠিক রাখতে হবে।
* ইউরিয়ার মাত্রা কোন অবস্থাতেই বাড়ানো যাবে ন।
* UMS এর গঠন বা তৈরীর প্রক্রিয়া পরিবর্তন করলে কাঙ্খিত ফল পাওয়া যাবে না।
* গাব/গর্ভবতী পশুকে UMS খাওয়ানো যাবে না।
* UMS পানিতে গুলিয়ে খাওয়ানো যাবে না।
* UMS খাওয়ানোর ১ ঘন্টা আগে ও পরে পশুকে পানি খাওয়ানো যাবে না।
* অসুস্থ পশুকে UMS খাওয়ানো যাবে না।
* ইউরিয়া মিশ্রিত খাদ্য পশুকে খালি পেটে খাওয়ানো যাবে না।









মৎস্য চাষে Probiotic কেন ব্যাবহার করবেন

Application & Benefits of Probiotic in Aquaculture The word Probiotic was first introduced by to describe “substances secreted ...